করোনা সংক্রমণ কমলেও বাড়ছে ডেঙ্গু
সারা দেশে করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমলেও বাড়ছে ডেঙ্গু। মহামারি করোনাকালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু উদ্বেগ বাড়ছে। মঙ্গলবার করোনায় সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। দেশে ভাইরাসটিতে আরও ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ২৪৯ জন। অন্যদিকে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৫৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে সারা দেশের হাসপাতালে ভর্তি থাকা মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৭৫ জনে। এটি কেবল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা। বাসায় চিকিৎসা নেওয়া রোগীরা সরকারি হিসাবের বাইরেই থেকে যাচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ২১২ এবং ঢাকার বাইরের ৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৭৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে ভর্তি রোগী ৯৮৮ জন ও অন্যান্য বিভাগে ৮৯ জন ভর্তি রোগী। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মারা যাওয়াদের মধ্যে চলতি আগস্ট মাসেই ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সারা দেশে এক সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমে এসেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের নিচে রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমণের হার ছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। একই সময়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও আগের চেয়ে কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এই হিসাবে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে এমনটা বলা যাচ্ছে না। সংক্রমণের হার কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে হবে।
সংক্রমণ কমে যাওয়ায় হাসপাতালে শয্যা সঙ্কট কাটছে। ঢাকার সরকারি ১৭টি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে অর্ধেকের বেশি শয্যা খালি রয়েছে। আগস্ট মাসের শুরুতে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ছিল দিনে ৩০ শতাংশ। তখন দিনে নতুন রোগী আক্রান্তের সংখ্যা ১২-১৫ হাজারের মধ্যে ওঠানামা করে। এ ছাড়া প্রতিদিন ২শর বেশি মারা যায় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপরেই চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ জন মারা গেছে। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ১৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ৫ জন, সিলেট বিভাগে ৯ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৯৬০ জন। ঢাকার পরে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে ২০৮ জন, রাজশাহীতে ২৭৫ জন, খুলনায় ২৭৬ জন, রংপুরে ১৩৯ জন, বরিশালে ১৫৮ জন, সিলেটে ২০৪ জনের শনাক্ত হয়েছে ২৪ ঘণ্টায়।