কুষ্টিয়ার এসপির বিরুদ্ধে বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, হাইকোর্টে তলব
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাকে আদালতে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে দূর্ব্যবহারের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে তাকে ডাকা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার স্বপ্রনোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালনকালে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে এসপি দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ আদালতের নজরে আসার পর আদালত এ আদেশ দেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. তাহিরুল ইসলাম।
গত ১৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পেওরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে বিচারিক হাকির হিসেবে দায়িদত্ব পালন করছিলেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান। নির্বাচনের দিন তার কাছে অভিযোগ আসে যে, ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে একদল যুবক অবেধ অবস্থান করছেন। এরপর তিনি কেন্দ্রে যেয়ে কতিপয় ব্যক্তিকে ভোট কেন্দ্রের বুথের ভিতর লম্বা বেঞ্চে পুলিং এজেন্টদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখেন। ওই ব্যক্তিদের কাছে পরিচয় পত্র দেখতে চাইলে তারা তা না দেখিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত এ ফোর সাইজের কাগজ দেখান। এ বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারকে ওই বুথে ডেকে আনা হয়। এরইমধ্যে ওই ভোট কেন্দ্রে ৪০/৫০ জন ফোর্সসহ কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত প্রবেশ করেন। এরপর প্রিজাইডিং অফিসারকে ডাকতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানকে পাঠান। অতিরিক্ত এসপি প্রিজাইডিং অফিসারকে ম্যাজিস্ট্রেটরে সঙ্গে কথা বলতে না দিয়ে এসপির কাছে নিয়ে যেতে চাপ দেন। প্রিজাইডিং অফিসারের যেতে দেরি হওয়ায় এসপি এগিয়ে আসেন। এরপর এসপি ওই ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে নির্বাচনের পরদিন ১৭ জানুয়ারি লিখিতভাবে এসপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওই বিচারক নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে আবেদন দেন। আবেদনে বলা হয়, পুলিশ সুপার ও তার সঙ্গী ফোর্সদের আচরণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ৬৯,৭০,৭৪, ৮০ ও ৮১ নম্বর বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। এই আবেদনের অনুলিপি আইন ও স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরেও পাঠানো হয়। যা আদালতের নজরে আসে। এরপর আদালত এসপিকে তলব করে আদেশ দেন।