গাবতলীতে নির্বাচনী সহিংসতায় বিজিবির গুলিতে নিহত ৪
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় বিজিবির গুলিতে নারীসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সময় উত্তেজিত হয়ে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলিবর্ষণ করে বিজিবি।
নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া চারজনই নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থক বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস আলী ফকির।
নিহতেরা হলেন-আব্দুর রশিদ (৪০), খোরশেদ আলম (৫৫), আলমগীর হোসেন (৪৫) ও উম্মে কুলসুম (৪০)। এ চারজনই উপজেলার কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের গুলি ও লাঠি চার্জে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস আলী ফকির বলেন, ‘ভোট গ্রহণ শেষে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে গণনা না করেই উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে ধরেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসিফ আহম্মেদ। ওই সময় আমার কর্মী-সমর্থকেরা কেন্দ্রেই ভোট গণনা করতে বলেন। কিন্তু এরপরেও ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ ব্যালট উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে উদ্দ্যত হন। এ সময় আমার কর্মী-সমর্থকেরা বাধা দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলিবর্ষণ করেন। তাদের গুলিতে চারজন মারা যান। ওই চারজনই আমার কর্মী সমর্থক ছিলেন।’
বালিয়াদিঘি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ জাকি বলেন, ‘ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই শাহজানপুরের ইউএনও বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করছিলেন। ৯ নং ওয়ার্ডে ভোট গণনা না করেই তিনি ব্যালট বাক্স উপজেলায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এ সময় নৌকার সমর্থকেরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে বাধা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ-বিজিবি লাঠিচার্জ এবং গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ চারজন মারা যান।’ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা চলতে থাকে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে গাবতলী উপজেলায় নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেট বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসিফ আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়া লতিফুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো তথ্য পাইনি।’
এ বিষয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।