নাটোরে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
বছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেল নাটোরসহ বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে। রবিবার বিকেল ৪টার দিকে ঝড়ের তাণ্ডবে নাটোর সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে।
এছাড়া সিংড়া, লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপেজলার বেশকিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে সদ্য গুটি আসা আম ও আমের মুকুল, রসুনসহ বিভিন্ন ফসল এবং ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
রবিবার দুপুরের দিকে নাটোর সদরে শুরু হয় ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে এই ঝড়-বৃষ্টি আর বজ্রপাত। এছাড়া সিংড়া, নলডাঙ্গা, লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার বেশকিছু এলাকায় প্রায় আধা ঘণ্টা ভারী ও হালকা বৃষ্টির সঙ্গে প্রচুর শিলা পড়তে থাকে এবং ঝড় প্রবাহিত হয়। বেশকিছু গাছপালা ও বাড়ি ঘর ভাঙার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, বৈশাখ মাস শুরু না হতেই হঠাৎ কাল বৈশাখীর থাবায় মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই ঝড়কে বছরের শুরুতে প্রকৃতির অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করছেন কেউ কেউ। কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে।
এছাড়া গুরদাসপুর পৌর সদরের কামারপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় চলন্ত একটি কারের ওপর বেল গাছের মোটা ডাল ভেঙে পড়ে। এসময় গাড়িটি ধীরগতিতে চললেও সামনের গ্লাস ও ছাদে বৈদ্যুতিক খুঁটির তার ছিঁড়ে গাছের ডালটি ভেঙে পড়লেও গাড়িচালক সুমন, তার স্ত্রী, শিশু সন্তানসহ একই পরিবারের ৫ জন প্রাণে বেঁচে গেছেন।
ঝড় কমলে বিকেল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছের ডাল কেটে গাড়িটি উদ্ধার করেন। পাশেই প্রাণে বেঁচে যাওয়া পরিবারটির লোকজন শিশু সন্তানকে জড়িয়ে কান্না করছিলেন। কারচালক সুমন উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি ভাড়ায় গাড়ি চালান।
এদিকে, উপজেলার নাজিরপুর, বিয়াঘাট, খুবজীপুর, মশিন্দা, ধারাবারিষা ও চাপিলা ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে ঘর-বাড়ি, ফসল, দোকানপাটসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ঝড়ের আভাস পেয়ে আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গুরুদাসপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ঝড়ে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতো। গাছের ডাল ভেঙে চলন্ত কারের ওপর পড়লেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় চালকসহ যাত্রীরা। গাড়িটি ভাঙা ডালের নিচ থেকে উদ্ধার করে সড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
নলডাঙ্গার এক কৃষকের বরাত দিয়ে উপজেলার সাংবাদিক আব্দুল মজিদ জানান, শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে সদ্য গুটি আসা আম ও আমের মুকুলের, রসুন, বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষকরা। তিনি জানান, ঝড়ের কারণে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে গেছে। কোথাও কোথাও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে এখনো সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।