যশোরে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ৩৬ হাজার
উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে গত তিন বছরে যশোরে ৩৬ হাজার ৯২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের শনাক্ত করে চিকিৎসাসেবার আওতায় আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যশোরের একটি হোটেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্ক আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, শুধুমাত্র ওষুধ দিয়ে নয় জীবনযাত্রা পরিবর্তন করে অসংক্রামক রোগ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। কার্যক্রমে সরকারি কর্মকর্তাদের তদারকি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
এছাড়া সরকারি বেসরকারিভাবে সবাইকে কার্যক্রম বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে তবেই কার্যক্রম সফল হবে। যশোর জেলার হাসপাতালগুলোতে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমের একটি পরিকল্পনা তৈরি হবে এবং গুণগত সেবা প্রদান নিশ্চিত হবে।
সেমিনারে এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্কের অসংক্রামক রোগের বিস্তার রোধ প্রকল্পের (এনডিসি প্রকল্প) টিম লিডার তরুণ কান্তি হোড় জানান, যশোর সদর, চৌগাছা, মণিরামপুর, কেশবপুর, সদর ও অভয়নগর উপজেলায় অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ৩৬ হাজার ৯২৬ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। একই সাথে ২ লাখ ৩৬ হাজার জনকে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে করণীয় ও চিকিৎসা সংক্রান্তে কাউন্সিলিং করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জেলায় অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর অধিকাংশই ৪৫-৫৪ বছর বয়সী; যা মোট শনাক্ত রোগীর ৪২ শতাংশ। এছাড়া ১৮-২৪ বছর বয়সী এক শতাংশ, ২৫-৩৪ বছর বয়সী ৬ শতাংশ, ৩৫-৪৪ বছর বয়সী ২৩ শতাংশ, ৫৫-৬৪ বছর বয়সী ১৮ শতাংশ, ৬৫ উর্ধ্ব বয়সীদের ১১ শতাংশ অসংক্রমক রোগে আক্রান্ত।
সেমিনারে আরও জানানো হয়, জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ১৪ হাজার ১৭৮জন রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ১১ হাজার ৯৬৭ জন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৪০৪ জন। বাকিরা স্ট্রোক, হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত।
বৃহস্পতিবার সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা আহমেদুল কবীর। যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনডিসি প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুলনা বিভাগের পরিচালক মো.মনজুরুল মোর্শেদ, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান।
অসংক্রামক রোগ মডেল ব্যবস্থাপনা (এনসিডি ম্যানেজমেন্ট মডেল) সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন স্বাস্থ্য বিভাগের এসিডিসি গ্রোগ্রামের কর্মকর্তা ডা. সরোয়ার উদ্দীন মিলন। আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা আহমেদুল কবীর বলেন, কোভিডের ধকলে মানুষ ভুগছেন। এর সাথে অসংক্রামক রোগের বিস্তার আছে। সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিভাগের আয় বাড়াতে হবে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পূর্বশত সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। সেটি করতে হলে স্বাস্থ্য বিভাগের বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে।