সুনামগঞ্জে পাউবো কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে চেয়ারম্যানের নামে মামলা
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে মামলার আসামি নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করা এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ায় হয়রানি করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা করা হয়েছে।
শাল্লা উপজেলায় দায়িত্বরত সুনামগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, বিশ্বজিৎ চৌধুরী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যান। একপর্যায়ে তাঁকে ২০টি বাঁধের কাজের প্রকল্প দেওয়ার দাবি জানান তিনি। কিন্তু আবদুল কাইয়ুম নীতিমালার বাইরে কোনো কাজ দেওয়া যাবে না বলে জানালে বিশ্বজিৎ চৌধুরী উত্তেজিত হয়ে যান। একপর্যায়ে তাঁকে গালিগালাজ করে লাঞ্ছিত করেন। পরে এ ঘটনায় রাতে শাল্লা থানায় মামলা করেন তিনি।
তবে বিশ্বজিৎ চৌধুরী তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, শাল্লায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম হচ্ছে। এ জন্য একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তিনি শুরু থেকেই অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এ জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি কেমন ছেলে, শাল্লার মানুষ জানে। কাজের সময় এক মাস পেরিয়ে গেলেও আমার এলাকায় একটি কাজও শুরু হয়নি। এসব বিষয়ে ওনার কাছে জানতে গিয়েছিলাম। আমি শপথ নিইনি, কীসের চেয়ারম্যান ইত্যাদি বলে আমাকে সেখান থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তিনি। এ নিয়ে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়। পরে শুনি, তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’
শাল্লা উপজেলায় বাঁধের কাজের প্রকল্প নির্ধারণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ১০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কাজের নীতিমালা অনুযায়ী গত বছরগুলোতে বাঁধের প্রকল্প নির্ধারণ, পিআইসি গঠনে উপজেলা প্রশাসন ও পাউবোর কর্মকর্তারা তাঁদের পরামর্শ ও মতামত নিতেন। উপজেলা কমিটির সদস্য হিসেবে তাঁরাও মাঠে গিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু এবার তাঁদের কোনো কিছু না জানিয়ে গোপনে সবকিছু করা হয়েছে। কমিটি গঠনে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে দাবি করে বাঁধের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, এ জন্য বিষয়টির তদন্ত ও কমিটিগুলো বাতিলের দাবি জানান তাঁরা।
পাউবোর কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ুম বলেন, শাল্লায় বাঁধের কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। শাল্লা উপজেলায় এবার বাঁধের কাজের ১৩৮টি প্রকল্প হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে ৩২টিতে।
পাউবো কর্মকর্তার মামলার বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মামলাটির তদন্তের পাশাপাশি আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।